মুক্তাগাছায় গোপন ঠাকুর


স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহে মুক্তাগাছায় তার নাম গোপন কৃষ্ণ চক্রবর্তী। গোপন ঠাকুর। ধুপ ধুনোর গন্ধ তার খুব প্রিয়। তেল আর জল সবসময় মিলে মিশে থাকে তার বাবরি চুলে। কালীবাড়ি পুকুরে স্নান করে মন্দিরে বসে গা শুকান গোপন ঠাকুর। তখন হয়তো গুনগুন করে শ্যামা সংগীত গান। সন্ধ্যা ঘন কালির মতো জমাট বাঁধে জোড়া মন্দিরের ভাঙা ইটে। সান্ধ্য পুজা সেরে পুরোহিত চলে গেলে প্রদীপের সলতেটা বাড়িয়ে দেয় গোপন গোপনে। মাকে অাধারে রাখতে চায় না গোপন। মন্দিরের দেয়াল ঘেষেই তার বাড়ি। বৌ এর নাম ছিলো ঝর্ণা। নাম কখনো যায় না, নাম থাকেই। মানুষটা চলে যায়। ঝর্ণা রানি মারা গেছে ৫ বছর আগে। মানুষ নাম নিয়ে যেতে পারে না। নাম পৃথিবীতেই রেখে যেতে হয়। নাম মানুষকে নিয়ে যায় অনেকদূর। গোপন ঠাকুরের মাছ ধরার নেশা। প্রবল ঝড় বৃষ্টির রাতে সে মাছ ধরতে বের হয় কখনো। তখন হয়তো ঝর্ণা রানির কথা মনে হয়। সে থাকলে হয়তো মানা করতো। একমাত্র ছেলের নাম অর্পণ। দুপুরগুলো প্রাচীনকাল থেকেই অলস। দুপুরে ছিপ নিয়ে পুকুরে বসে গোপন ঠাকুর ছেলেকে নিয়ে ভাবে অার হিসেব কষে আশ্বিন মাস কতটা দূরে। দূর্গা পুজার ঢাকের শব্দ তার হৃদয় থেকেই শুরু হয়। আবারো ধুপ, ধুনো, আরতি। জোড়া মন্দির আর গোপন ঠাকুর একসাথে প্রাচীন হতে থাকে প্রাচীন এই শহরে। মাধবকুন্ডু ঝর্ণাতে একবার স্নান করার তার খুব শখ। হয়তো শখটা তার না ঝর্ণা রানির ছিলো। শখের সাথে সাথে সে ঝর্ণাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। গোপন ঠাকুরের চোখে সর্বদা হাসি।আমাদের মনে হয় সে চোখ দিয়ে নয় তাকায় আরো গভীর থেকে। অনেক গোপন থেকে।
Previous
Next Post »
Powered By Blogger